গাজীপুরের কোনাবাড়ি থানাধীন বাইমাইল এলাকায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তুচ্ছ কথাকাটাকাটির জেরে হৃদয়বিদারক এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। নিহত কিশোরের নাম রাব্বি হোসেন (১৭), যিনি স্থানীয় একটি কারখানায় খণ্ডকালীন কাজ করতেন এবং পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাব্বি ও অভিযুক্ত হৃদয় মিয়া (১৯) দীর্ঘদিন ধরেই একই মহল্লায় বসবাস করতেন। ঘটনার দিন একটি ফুটবল খেলা নিয়ে সামান্য তর্ক থেকে তাদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়, যা ক্রমেই গালিগালাজ ও ধাক্কাধাক্কিতে রূপ নেয়। এক পর্যায়ে হৃদয় একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাব্বিকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় রাব্বিকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত হৃদয়ের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং বাড়ির অধিকাংশ অংশ পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কোনাবাড়ি থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, “ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত হৃদয় পলাতক রয়েছে। তাকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
নিহত রাব্বির পরিবার এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে। তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “আমার ছেলে তো কোনো বড় অপরাধ করেনি, শুধু একটা কথার জেরে ওকে মেরে ফেলা হলো! আমি বিচার চাই।”
পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে — একটি হত্যা মামলা ও আরেকটি অগ্নিসংযোগের অভিযোগে।
এ ঘটনাটি আবারো প্রমাণ করলো, সমাজে সহনশীলতার অভাব কীভাবে দ্রুত সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজ সচেতনদের জন্য এক বড় সতর্কবার্তা।